শনিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৩

"কবি মতিউর রহমান মল্লিক" নির্মম প্রহরের নিয়ম ঘুরিয়ে দিলেন যিনি


গত তিন দশক ধরে এই বাংলার আকাশ-বাতাস কবি মতিউর রহমান মল্লিকের  গানে, সুরে, কবিতায় মুখরিত হয়েছে।
তিনি নজরুল সৃষ্ট ইসলামী গানের ধারাকে একটি পূর্ণাঙ্গ ধারায় পরিণত করেছেন। তাঁর গানের বাণী, কবিতার বাণীতে প্রকাশ পেয়েছে উন্নততর জীবনবোধ।
আমার গানের ভাষা
জীবনের সাথে যেন
মিলেমিশে হয় একাকার,
বা
এখনো মানুষ মরে পথের পরে
এখন আসেনি সুখ ঘরে ঘরে
কি করে তাহলে তুমি নেবে বিশ্রাম
কি করে তাহলে ছেড়ে দেবে সংগ্রাম।
বা
টিক টিক টিক টিক যে ঘড়িটা
বাজে ঠিক ঠিক বাজে
কেউ কি জানে সেই ঘড়িটা
লাগবে কয়দিন কাজে




এরকমই হাজার হাজার জনপ্রিয় গানের গীতিকার ও সুরকার ছিলেন তিনি। শিল্পী হিসেবে তিনি রেখেছেন অনন্য কীর্তির নজির। দেশে-বিদেশে হাজারও মঞ্চে হাজারও গান গেয়েছেন তিনি।

সমকালীন বাংলা কবিতায়ও তিনি রেখেছেন অনন্য কীর্তির স্বাক্ষর। তাঁর রচিত কবিতার বই আবর্তিত তৃণলতা, অনবরত বৃক্ষের গান, তোমার ভাষায় তীক্ষষ্ট ছোরা, চিত্রল প্রজাতি ও নিষণ্ন পাখির নীড়েসহ অজস্র অগ্রন্থিত কবিতা রয়েছে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার পাতায় ছড়িয়ে। কবি হিসেবে তিনি সমকালীন বাংলা ভাষার তাবত্ খ্যাতনামা কবিদের স্বতঃস্ফূর্ত স্বীকৃতি লাভ করেছেন, পেয়েছেন ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা

বিশুদ্ধ ইসলামী ধারায় শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি তথা জীবনচর্চার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কবি মতিউর রহমান মল্লিক। এ লক্ষ্যে তিনি সব বাংলা ভাষী মানুষদের নিয়ে দেশে-বিদেশে গড়ে তুলেছেন একই ধারার শত শত সংগঠন। বাংলার মুসলিম ইতিহাসের হাজার বছরে কবি মতিউর রহমান মল্লিকের জীবন ও কর্মের মূল্য কোন উচ্চতায় স্থান পাবে বলা কঠিন। তিনি তার একটি গানে লিখেছেন—

‘নিয়তির বাঁধ ভেঙে/নির্মম প্রহরের নিয়ম ঘুরাই।’

সত্যি সত্যিই তিনি নির্মম প্রহরের নিয়ম ঘুরিয়ে দিয়েছেন। সৃষ্টি করেছেন জীবন ও শিল্পে নিজস্ব এক প্রবল স্রোতধারা। দিন যত যাচ্ছে এই ধারা ততই বেগবান হয়ে উঠছে।

কেবল বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলাভাষী মুসলিমদের ওপর নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ভাষার মুসলিম জনগোষ্ঠীর কাছে তার জীবন ও কর্ম এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছে। তার জীবন ও কর্ম পরিণত হচ্ছে নতুন পৃথিবী গড়ার হাতিয়ারে। আল্লাহ সুবহানাল্লাহ ওয়াতায়ালা এই মহান জীবনশিল্পীকে জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা দান করবেন—এটুকু মোনাজাত আমাদের।

 লেখকঃ আহমদ হাসান আবদুল্লাহ

২টি মন্তব্য: